খাবারের প্লেটে প্রতি বেলায় মাছ থাকা চাই। কারণ আমরা ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। বাংলাদেশে হরেক রকমের মাছ আছে। কোনোটা কাঁটাওয়ালা আবার কোনোটা কাঁটা ছাড়া। খেতে গেলে অনেক সময় মাছের ছোট কাঁটা গলায় বিঁধে যায়। কিন্তু এটির সমাধানে তৎক্ষণাৎ প্রাথমিক চিকিৎসা আমরা অনেকেই জানি না।
প্রাথমিক চিকিৎসা না জানার কারণে গলায় অনেক্ষণ কাঁটা বিঁধে থাকায় অনেক সময় গলে ফুলে যায়, ব্যথা হয়। আর এই ব্যথা অনেক কষ্টকর। তাই মাছের কাঁটা বিঁধলে এভাবে কষ্ট না পেয়ে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলেই সহজে এই কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি-
১। গলায় কাঁটা বিঁধলে শুকনো সাদা ভাত চটকে দলা পাকিয়ে গোল গোল ছোটো বলের মতো বানিয়ে তা গিলে খেয়ে ফেলুন। এরপর পানি পান করুন। একবারে না হলে কয়েকবার এ উপায় অবলম্বন করুন। এভাবে ভাত ও পানি খেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঁটা নেমে যায়। এ ছাড়াও শুকনো মুড়ি কিংবা গরম দুধে ভেজানো পাউরুটি খেলেও কিছুটা সমাধান পাওয়া যায়।
২। পাকা কলা এক কামড়ে একটু বেশি করে নিয়ে অল্প চিবিয়ে গিলে নিন। এতেও কাঁটা নেমে যায়। পাকা কলার মিউজিলেজের পিচ্ছিলভাব গলায় ফুটে থাকা কাঁটাকে সহজে বিতাড়িত করতে সাহায্য করে।
৩। মাছের কাঁটা গলিয়ে দেওয়ার জন্য লবণ ও লেবুর মিশ্রণও বেশ কার্যকর। এক টুকরো লেবুতে হালকা লবণ মিশিয়ে লেবুটি চুষে খেয়ে নিন। লেবুর অম্লতা ও লবণের লবণাক্ততা মিলিতভাবে কাঁটাটিকে পাতলা করে গলিয়ে দেবে। ফলে সহজে গলা থেকে কাঁটাটি নেমে যাবে।
৪। গলায় ফুটে থাকা মাছের কাঁটা নামাতে ভিনেগার দারুণ কাজ করে। জলের সঙ্গে সামান্য ভিনেগার মিশিয়ে খেলে আটকে থাকা কাঁটা খুব সহজেই গলা থেকে নেমে যায়। ভিনেগার অনেকটা পাতি লেবুর মতোই কাজ করে।
৫। গলায় কাঁটা বিঁধলে দেরি না করে এক চা চামচ এডিবল অলিভ অয়েল খেয়ে নিন। অলিভ অয়েল অন্য তেলের তুলনায় বেশি পিচ্ছিল। তাই গলা থেকে পিছলে নেমে যাবে মাছের কাঁটা।
৬। কোনো ঠান্ডা কোমলপানীয়ের সঙ্গে লেবু মিশিয়ে অল্প অল্প করে চুমুক দিন। কোমলপানীয়ের সোডা আর লেবুর অম্লত্ব একসঙ্গে মিলে মাছের কাঁটা গলিয়ে দিতে সাহায্য করে। এটি কাঁটা নামানোর সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতি।
৭। উপরের কোনো উপাদানই যদি হাতের কাছে না থাকে, তাহলে বেশ খানিকটা পানি খেয়েই গলা থেকে কাঁটা নামানোর চেষ্ট করা যেতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, যদি হালকা গরম জলে সামান্য লবণ মিশিয়ে তা পান করেন। এতে কাঁটা নরম হয়ে তাড়াতাড়ি গলা থেকে নেমে যাবে।
৮। জোরে জোরে ক্রমাগত দু-চারটা কাশি দিলে কফ রিফ্লেক্সের মাধ্যমে অনেক সময় গলার পেছনের দেয়ালে আটকে থাকা মাছের কাঁটা কাশির দমকে ছুটে গিয়ে সামনে চলে আসে এবং বের হয়ে যায়।
৯। এরপরও গলায় ফুটে থাকা কাঁটা না নেমে গেলে নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কিংবা নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। স্পেশাল ফরেন বডি রিমুভারের সাহায্যে এরকম বিঁধে থাকা কাঁটা বের করে আনা সম্ভব।